রাজস্থানের ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে একজন পাকিস্তানি রেঞ্জার্স সদস্যকে আটকের দাবি করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শনিবার (৩ মে) ওই পাকিস্তানি নিরাপত্তাকর্মীকে আটকের কয়েক ঘণ্টা পর মধ্যরাতে নিয়ন্ত্রণরেখায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে বন্দুকধারীর হামলার পরের দিন পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশের পর পূর্ণম কুমার সাহু নামে এক বিএসএফকে আটক করে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। এর কয়েকদিন পর এবার রাজস্থান সীমান্তে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সকে আটকের ঘটনা ঘটল।
আটক হওয়া পাকিস্তানি সদস্যের এখনো নাম প্রকাশ করা হয়নি। তিনি বর্তমানে বিএসএফের রাজস্থান ফ্রন্টিয়ারের হেফাজতে রয়েছেন।এনডিটিভি বলছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভুলবশত সীমান্ত অতিক্রমকারী নিরাপত্তাবাহিনীকে ফেরত দেয়ার একটি প্রচলিত প্রক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণে পাকিস্তান সাহুকে আটকে রেখেছে। ফলে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সকে ভারত কী করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সকে আটকের কয়েকঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণরেখায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।এনডিটিভি বলছে, শনিবার রাতে কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুল্লা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধার, নওশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টরে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে টানা ১০ দিনের তো দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হলো।প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে রাতের গোলাগুলি সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ; যেখানে একসঙ্গে সর্বাধিক সংখ্যক পাকিস্তানি সেনা অংশ নেয়। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
এনডিটিভি বলছে, বিএসএফ সদস্য সাহুর মুক্তির জন্য একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোনো সময়সীমা বা তার বর্তমান অবস্থান স্পষ্ট করেনি। গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। হামলার জন্য নয়াদিল্লি পরোক্ষভাবে ইসলামাবাদকে দায়ী করে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করা এবং ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা। এ ঘটনার পর পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে ইসলামাবাদও।
এই আবহের মধ্যেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ হুমকি দিয়েছেন, সিন্ধু নদের চুক্তি ভঙ্গ করে ভারত যদি কোনো কাঠামো নির্মাণ করে, তাহলে তা গুঁড়িয়ে দেবে ইসলামাবাদ। তিনি নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে নাটক মঞ্চস্থ করার অভিযোগ এনে কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়েছেন।